Description
খেজুরের গুড় বাংলাদেশের এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা শীতকালের অন্যতম প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি শুধু স্বাদের জন্য নয়, এর পুষ্টিগুণ ও ঐতিহ্যের কারণে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
খেজুরের গুড় কীভাবে তৈরি হয়?
- গাছ থেকে রস সংগ্রহ:
- শীতকালে খেজুর গাছের কাণ্ডে কাটা হয় এবং সেখানে একটি বাঁশের নল বা মাটির পাত্র বসানো হয়।
- রাতভর গাছ থেকে নির্গত হওয়া রস পাত্রে জমা হয়।
- ভোরে সেই রস সংগ্রহ করা হয়।
- রস থেকে গুড় তৈরি:
- সংগ্রহ করা রস একটি বড় পাত্রে (সাধারণত মাটির চুলায়) অল্প আঁচে জ্বাল দেওয়া হয়।
- ধীরে ধীরে রস ঘন হয়ে একটি মিষ্টি আঠালো পদার্থে পরিণত হয়।
- এরপর সেটি কাচ বা মাটির ছাঁচে ঢেলে ঠাণ্ডা করে শক্ত পাটালিতে রূপান্তর করা হয়।
খেজুরের গুড়ের প্রকারভেদ
- নলেন গুড় (তরল):
- এটি তরল অবস্থায় থাকে এবং সেরা মানের খেজুর রস থেকে তৈরি হয়।
- পিঠা বা পায়েসে এটি ব্যবহৃত হয়।
- পাটালি গুড়:
- এটি শক্ত আকারে তৈরি হয় এবং দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায়।
- বিভিন্ন মিষ্টি খাবারে এটি খুবই জনপ্রিয়।
- দানা গুড়:
- গুড় ঠাণ্ডা করার সময় কণা আকারে তৈরি করা হয়।
- এটি সাধারণত চা বা নাস্তার সঙ্গে খাওয়া হয়।
খেজুরের গুড়ের পুষ্টিগুণ
- প্রাকৃতিক মিষ্টি:
- এতে কোনো কৃত্রিম রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না, যা এটি স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
- ভিটামিন ও মিনারেল:
- আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ।
- এটি শরীরে শক্তি যোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- হজম সহায়ক:
- এটি হজমে সহায়ক এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- রক্ত পরিষ্কার:
- এটি রক্ত পরিশোধনে সাহায্য করে এবং শীতকালীন শারীরিক দুর্বলতা দূর করে।
খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি জনপ্রিয় খাবার
- পিঠা:
- পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, এবং পাটিসাপটায় নলেন গুড়ের ব্যবহার খুবই প্রচলিত।
- পায়েস ও ক্ষীর:
- দুধের সঙ্গে মিশিয়ে এটি একটি অসাধারণ মিষ্টি স্বাদ তৈরি করে।
- গুড়ের সন্দেশ:
- খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি এই মিষ্টি সন্দেশ অত্যন্ত সুস্বাদু।
- গুড়ের চা:
- চিনি ছাড়া খেজুরের গুড় ব্যবহার করে তৈরি চা অনেকের প্রিয়।
স্বাস্থ্যগত উপকারিতা
- শীতকালে গুড় শরীর গরম রাখে।
- ঠান্ডা-কাশি থেকে আরাম দেয়।
- আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায় রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে কার্যকর।
- প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
খেজুরের গুড় সংরক্ষণ
- এটি সাধারণত শীতকালে বেশি তৈরি হয়, তবে সারা বছর সংরক্ষণ করার জন্য ঠাণ্ডা ও শুকনো জায়গায় রাখতে হয়।
- প্যাকেটজাত বা এয়ারটাইট পাত্রে রাখলে দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
Reviews
There are no reviews yet.